কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের আলোচিত চাঁদাবাজি মামলার আসামি লাল মিয়া ও বেলালের বিরুদ্ধে এবাব মামলার বাদি নুরুল আলমকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই মামলার বাদিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আসামিরা। এরঅংশ হিসেবে গত ২১ এপ্রিল বিকালে সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় প্রকাশ্যে গালি-গালাজ, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন মামলার আসামি লাল মিয়া ও বেলাল। এই ঘটনায় ২২ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন ভুক্তভোগি ঝিনুক ব্যবসায়ী নুরুল আলম।
ডায়েরীতে বলা হয়েছে- চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার সদর থানায় পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাহারছড়া এলাকার ছৈয়দ নুরের ছেলে লাল মিয়া, লাল মিয়ার ছেলে রাসেল ওরফে ফরহাদ, হাসান মো. বকুল, আজাদ হোসেন ও দক্ষিণ কলাতলী এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. বেলালের নামে চাঁদাবাজি আইনে মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল লাল মিয়াসহ কয়েকজন আসামি। এরপর তারা জামিনে বের হয়ে বিভিন্ন সময় মামলা আপোষ দিতে হুমকি ধুমকি দেন। সর্বশেষ ২১ এপ্রিল বিকালে সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় অতর্কিতভাবে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে মারধর করতে তেড়ে আসে লাল মিয়া ও বেলাল। এসময় মামলা প্রত্যাহার না করলে মিথ্যা মামলার, হামলা ও বিভিন্ন ভয়ভীতিসহ প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হয়। জেল ফেরত এই আসামিতে প্রকাশ্যে হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগায় ২২ এপ্রিল লাল মিয়া ও বেলালের বিরুদ্ধে জিডি দায়ের করি।
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে- সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টস্থ জেলা প্রশাসনের তথ্য সেবা কেন্দ্রের পশ্চিমে বালিয়াড়ির দোকানের একাংশ নিয়ন্ত্রণ করেন আলোচিত লাল মিয়া। ব্যবসায়ীদের নিজস্ব কার্ড থাকলেও লাল মিয়াকে দিতে হতো একটি নির্দিষ্ট চাঁদা। জেলা প্রশাসন বরাবরে ব্যবসায়ীরা বার্ষিক রাজস্ব দিয়ে থাকলেও জায়গার ভাড়া দাবি করে কার্ডদারী দোকানদারদের থেকে লাল মিয়াও একটি ভাড়া আদায় করে প্রতিবছর। নানানমূখী নির্যাতনের মাধ্যমে দীর্ঘ বছর ধরে এই টাকা আদায় করছে লাল মিয়া। সাথে ছিল লাল মিয়ার কয়েকজন ছেলেসহ অনেক সহযোগি।
এবিষয়ে ভুক্তভোগিরা অতিষ্ট হয়ে লাল মিয়াসহ অনেকের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন ঝিলংজা ১নং ওয়ার্ড বড়ছড়াস্থ শুকনাছড়ি এলাকার মৃত কবীর হোছাইনের ছেলে সুগন্ধা পয়েন্টের ঝিনুক ব্যবসায়ী নুরুল আলম। এজাহার দায়েরের পর তদন্ত করেন পুলিশ। তদন্তের সত্যতা পাওয়ায় ৩১ জানুয়ারি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয় এজাহার। এজাহার নামীয় আসামী করা হয়েছে ৫ জনকে। এই মামলায় ডিবি পুলিশের হাত গ্রেপ্তার হন কক্সবাজার পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাহারছড়া এলাকার ছৈয়দ নুরের ছেলে লাল মিয়া ও লাল মিয়ার ছেলে হাসান মো. বকুল। আর বাকিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। বর্তমানে মামলার সকল আসামিরা জামিনে বের হয়ে ফের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় হানা দিচ্ছে। মামলার বাদি ও স্বাক্ষীদের প্রকাশ্যে হুমকি-ধুমকি দিয়ে যাচ্ছে।